logo

শিরোনাম

লাগামবিহীন অপবক্তব্য - সত্যতা বিসর্জিত আস্ফালন

Bangalir Kantha
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৭ জুলাই, ২০২৩ | সময়ঃ ০৩:৩৮
photo

ইমরান চৌধুরী,বিইএম
(যুক্তরাজ্য কনজার্ভেটিভ পার্টির নেতা,রাজনৈতিক গবেষক এবং কলামিস্ট)

অতি সম্প্রতি একটা খবরের কাগজে পড়লাম ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিস বক্তব্য দিয়েছে, ‘' দেশে এখনো সুপ্ত টেরর সেল আছে, যাদেরকে উৎপাটন করা যায় নি ! ‘' এরপরই হোলি আর্টিজন হত্যাযজ্ঞের বার্ষিকীঃ সেই হৃদয় বিদারক জঘন্যতম পশুত্য । নিরীহ মানুষের আত্মত্যাগ এক মস্তিষ্কধৌতকৃত একদল অমানুষ দ্বারা। এখনো ঐ ধরনের মস্তিষ্কধৌতকৃতদের অভাব নেই, হয়ত নিত্য দিন এই অমানুষ তৈরি করছে বা হচ্ছে । অধুনা বিলাতে আনিত এক ঘৃণা প্রচারককে তার প্রদাহজনক অপবক্তব্য প্রদাণ থেকে রুদ্ধ করেছে অধিকর্তা সংস্থা  - যারা কিনা এই সত্যতা বিসর্জিত আস্ফালন এর প্রথিকৃত হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে বন্যার জলের স্রোতের মত, মাশরুমের মতো বেড়ে উঠছে ক্রমান্বয়ে করছে বিঘ্নিত যুব আত্মউন্নয়ন, দিকভ্রস্ট করতে চাচ্ছে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের এই গগনচুম্বী অগ্রযাত্রাকে ।
 
 
সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক ,টুইটার, মেসেঞ্জ্যার , টিকটক , ইউ টিউব এর মাধ্যমে আসতেই আছে লক্ষ লক্ষ সংলাপ, আলোচনা , বক্তব্য , বক্তৃতা , বিতর্ক কোনটা সামাজিক বিষয়ে, কোনটা ধর্মীয় , কোনটা ঐতিহাসিক , কোনটা জীবনব্যবস্থা এবং কোনটা অর্থনৈতিক । ইন্টারনেট এই মহাসড়কে সবাই এক একজন পণ্ডিত - যে যেই বিষয়ে কথা বলছেন সেই কেমন যেন প্রচ্ছন্নভাবে জাহির করছেন সেই একমাত্র মহাজ্ঞানী বাকিরা সবাই তার নস্যিতুল্য । যাচাই , বাছাই, সত্যতা , প্রামাণিকতা, ঐতিহাসিক প্রমাণ এর কোন তোয়াক্কা নেই কারো ।
 
যার  মুখে যা আসে বলছে  যে যাহা শিখেছে অপ্রমাণিত , অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত তথাকতিত প্রবক্তার কাছ থেকে , কেউ কেউ আবার পড়েছে অপ্রমাণিত , অসত্য বই , মাগ্যাজিন , এবং ইতিহাস কিংবা ধর্মীয় বলে চালিত অসত্য গ্রন্থ , বই বা পুস্তিকা থেকে বলেই যাচ্ছে  ঐ সব উদ্ভবকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যয়ভার করে ।
 
কেউ করছে কৌতুক এর মাধ্যমে, কেউ করছে গলার ধমনী প্রসারিত করে, কেউ করছে আক্রমণাত্মকভাবে, কেউ গাইছে গান , কেউ কেউ আবার গাইছে প্যারোডি , কেউ কবিতা উদ্দেশ্য সবারই  এক । এ যেনো এক মন্ত্রের সাধন না হয় শরীর পাতন করার অপপ্রয়াস । নিরর, নিথর , কখনো উচ্ছ্বসিত, আবার কখনো কৌতুকের ক্যাতুক্যুতুতে হাস্যজ্জল , কখনো রাগান্বিত বক্তার অগ্নিঝরা উত্কীর্তন বা ইস্তাহার শুনে, আবার কখনো কম্পিত বক্তব্যের জ্বালাময়ী আহ্বানে, ক্রোধান্বিত বক্তার বক্তব্যের বিবাদের সূত্রপাত কিংবা আগ্রাসনে যোগদানের অনুপ্রেরনায় ।
 
নেই কোন প্রকার আসেধ কিংবা সীমাবদ্ধতা এই লাগামবিহীন কথোপকথনের বা ততাকথিত বক্তব্যের । আর এই সব খোলা সমাবেশ, বন্ধ প্রচার, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে উদ্গত সকল ধরনের বক্তব্যের এক বিমুগ্ধ শ্রোতা বা শ্রোতৃমণ্ডলী কিংবা পাঠকবর্গ বা প্রেক্ষক বা দর্শক এই হচ্ছে আজকের যুব/যুবতী সমাজ । প্রাপশ্চিম (পশ্চিম) ও পূর্বের (প্রাচ্য )   গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণের মাঝখানে আজকের ঐ সব শ্রোতা বা দর্শকরা আদর্শগতভাবে মগজ ধোলাই হচ্ছে প্রতহ্য - বিভ্রান্ত - দিক নির্দেশনাবিহীন হচ্ছে - বিলীন হয়ে যাচ্ছে এই পিচ্ছিল ঢালুতে । যুবকরা হারিয়ে ফেলছে জীবনের উন্নয়নের দিকনির্দেশনা, অযাচিত যে অন্ধকার ভবিষ্যৎ চিত্রায়িত হয়েছে  কিংবা অহরহ হচ্ছে ওদের মননে সে চিত্র মানব সভ্যতার জন্য এক বিপদজনক আরমাগাডেন ।
 
 
যখন এই একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের যুব সমাজ , আমাদের কিশোর সমাজ এর উচিত প্রযুক্তি , কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ইন্টারনেটের যুগে যুগপৎ ভাবে এর সুফল গ্রহণ করার  এবং তারাও উদগ্রিব ঐ সোপানের যাত্রী হতে কিন্তু এই ক্রান্তিলগ্নে একদল ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কিভাবে অযাচিত, অহেতুক, অপ্রযোজ্য , উৎসবিহীন,  অসত্য কথোপকথন , আলোচনা রাত জেগে শুনিয়ে এই সব আগামী দিনের জাতীর চালিকা শক্তি বর্তমান যুব সমাজ কে  বিভ্রান্ত করার প্রয়োজনটা তা আজ জানার সময় এসেছে ।
 
আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে  অধিকর্তা সংস্থাদের সাথে হাতে হাত  মিলিয়ে এই অপশক্তিকে উৎপাটন করার নিমিত্তে ; তা না হলে ‘' দেশে এখনো সুপ্ত টেরর সেল আছে, যাদেরকে উৎপাটন করা যায় নি !’' এই ধরনের প্রেস ব্রিফিং সর্বদাই শুনতে হবে । অথবা ঐ সব লাগামহীন বক্তব্যের স্রোতাদের মস্তিষ্কধৌতকণকরতঃ করে ঘটাতে পারে  অযাচিত এপ্যোক্লিপ্স (সর্বনাশ) ।

  • নিউজ ভিউ 2817