গত পাঁচ বছরে দুর্নীতির বিভিন্ন মামলার আসামিদের ৬ হাজার ৪১৭ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭৯৩ টাকা জরিমানা ও ৪৭৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭২১ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আদালতের নির্দেশনায় জরিমানা ও বাজেয়াপ্তের মাধ্যমে ওই অর্থ এসেছে।
দুর্নীতির বিভিন্ন দায়ের করা মামলায় দুর্নীতিবাজ আসামিদের কাছ থেকে ২০১৮ সালে ১৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯৯১ টাকা, ২০১৯ সালে ৩৪৯৭ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৯, ২০২০ সালে ৭২ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩০, ২০২১ সালে ৭৫ কোটি ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ এবং ২০২২ সালে ২৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ টাকার জরিমানা করা হয়েছে। দুদক থেকে প্রকাশিত সবশেষ বার্ষিক বিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, দুর্নীতিবাজদের মোট ৪৭৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭২১ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০১৮ সালে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৫২ টাকা, ২০১৯ সালে ৪৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩৭৪ টাকা, ২০২০ সালে ৩ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার, ২০২১ সালে ১০ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৮ এবং ২০২২ সালে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৬৭ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫ বছরে জরিমানা করেছি ৬ হাজার ৪১৭ কোটি ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকার বেশি। আমি মনে করি জরিমানা ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত না করে অন্যায়কারীদের জেল দিলে ভালো মানুষের ট্যাক্সের টাকায় তাদের খাওয়াতে হয়। আর জরিমানা আদায় করলে দুর্নীতিবাজরা একটি শিক্ষা পায় যে, আমরা যত টাকাই আয় করি না কেন, রাষ্ট্র সব টাকা নিয়ে নেবে। ফলে অবৈধভাবে আয় করার মানসিকতা কমে আসবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই অন্যায় করলে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক। আমরা যথাযথভাবেই আদালতেকে বলতেছি, ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত আমাদের সাহায্য করছে। আমাদের কর্মকর্তা ও আদালতের সাহায্যে কাজগুলো এগিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছি।
এছাড়া ২০২২ সালের পুরো বছরে দুর্নীতিবাজদের মোট ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ১৪৪.২৪৪৫৬ একর জমি, ২৭টি বাড়ি, ১৯টি ফ্ল্যাট, ১১টি গাড়ি ও ৪টি নৌ-যান রয়েছে।
অন্যদিকে অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ হওয়ার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৪৪৮টি ব্যাংক হিসাব ও ১১টি এফডিআরে ১৪৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার ৭০৬ টাকা, ২৭ হাজার ৯৫৪ মার্কিন ডলার ও ৭৯ কোটি ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬০ টাকার শেয়ার। মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ হলো ২২৪ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৬ টাকা।
আদালতের ভিন্ন কোনো নির্দেশনা না থাকলে দুদক সংশ্লিষ্ট ওই সব সম্পদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে দুদকের ব্যবস্থাপনা ইউনিট। ২০১৯ সাল থেকে কমিশনের স্বতন্ত্র ইউনিট হিসেবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট যাত্রা শুরু করে।